22 January, 2016

শেষ হয়েও হয়নি শেষ

আজ বেশিই মেঘার কথা মনে পরছে।
মনে পরবেইনা কেন,
আজকে যে আমার মেঘা আমাকে
ছেড়ে চলে গিয়েছে।
৩ বছরের এত কস্ট করে পানির
ফোটার মত টুপ টুপ করে জমানো
ভালবাসা গুলা একঝাপ্টা বন্যা
দিয়ে ভাসিয়ে দিয়ে গেল।
আর যাওয়ার সময় দিয়ে গেল ছোট্ট
একটা শব্দ,
""ভাল থেক"".
আচ্ছা ভাল থেক বললেই কি ভাল
থাকা যাই?
যাই না।
.
ওর সাথে কাটানো সব স্মৃতির কথা
মনে পরে যাচ্ছে।
কেন এমন হল??
এই সব উত্তর সব সময়ই উত্তরি থেকে
যাই।
মাঝে মাঝে গলা ফাটিয়ে বলতে
ইচ্ছা করে,
হা মেঘা আমি সত্যি ভাল আছি।
অনেক ভাল আছি।
.
সবার জীবনের মত আমার জীবনেও
প্রেম এসেছিল।
কিন্তু সেই ভয়ে আর ইচ্ছা জাগেনি
প্রেম করার।
প্রেম আর ভালবাসার মাঝে সত্যিই
একটা আলাদা পার্থক্য আছে।
প্রেম বার বার আসে আর ভালবাসা
একবারি আসে।
আমার জীবনেও এসেছিল,
মেঘার ভালবাসা।
.
মেঘার দোষ দিয়েই আর। লাভ কি??
পরিবারের বড় মেয়ে হয়ে কিইবা
করার ছিল ওর,
কোন বেকার ছেলের হাতেতো
আর তুলে দিবেনা তাকে।
তাই ভাল ছেলে দেখে মেঘার
বিয়ে দিয়ে দেই।
এর মাঝে মেঘা যে আমার সাথে
যোগাযোগ করেনি তা নয়,
অনেক বারই ফোন দিত কিন্তু আমিই
আর কথা বলিনি।
কি লাভ অন্যের প্রিয়সীর সাথে
কথা বলে।
.
সব কিছু হারিয়ে যখন একা হয়ে
যাচ্ছিলাম তখন পরিবার থেকে
জোর করেই দেশের বাইরে
পাঠিয়ে দিল আমাকে।
আমিও আর না করিনি।
কিছু না হলেও দুরে গিয়ে মেঘার
কথা ভুলে থাকতে পারব।
তাই রাজি হয়ে গেছিলাম।
.
অনেক বছর পর নিজের দিকে
তাকিয়ে দেখলাম,
সেই আগের সে আর আমি নেই,
গায়ে এখন কোর্ট আর ফরমাল ড্রেস
থাকে আমার।
আজ মেঘাকে ডেকে বলতে ইচ্ছা
করছে দেখ সেই বেকার আর এখন
বেকার নেই।
এখন তোমার মত হাজার মেয়েকে
বসিয়ে খাওয়াইতে পারে।
কিন্তু সেই হাজার মেয়ের মাঝে
তোমার ভালবাসা পাবনা বলে আর
বিয়েও করিনি।
.
কয়েক বছর পর আজ দেশে আসলাম।
বাবা মা ভাই বোন সবাই আজ খুশি।
কিন্তু আমার মন যে আজও মেঘাকে
খুজে বেরায়।
মনগুলা বেশ বেহায়া হয়,
যার উপর মন চলে যাই তার উপর
থেকে সহজে মন আর তোলা যাইনা,
আর যদি তোলা যাই তবে সেটা
ভালবাসা থাকেনা।
.
কয়েকদিন থেকেই মা বাবা বেশ
জোরাজুরি করছে বিয়ের জন্য
কিন্তু মা বাবাকে কি করে
বোঝাবো যে আমার মেঘাকেই
চাই।
আমি মেঘাকে ভালবাসি।
কিন্তু মা বাবা শুনতে নারাজ।
বাবা মা বলল যে চলে গেছে
তাকে নিয়ে ভেবে কি লাভ??
তাই আমিও দেখলাম যে যাওয়ার
সেতো যাবেই তাইলে কেন তার
কথা ভেবে আমি এমন করব।
তাই ইচ্ছারর বিরুদ্ধেই গেলাম
মেয়ে দেখতে।
.
যথাসময়ে মেয়ে আমাদের সামনে
আনা হল।
কিন্তু আমি মেয়ের মুখ না দেখেই
হা করে দিলাম।
কিন্তু সবার কথাই আমাকে আর
মেয়েটিকে আলাদা ঘরে কথা
বলতে দেওয়া হল।
আমি মেয়েটারর দিকে ঘুরে
তাকালাম নাহ।
কেন জানি মেঘার ভালবাসার
জোর আমাকে ওর দিকে তাকাতে
দিচ্ছে নাহ।
মন থেকে মনে হচ্ছে কেও আমাকে
ভেতর থেকে বলছে তুই মেঘাকে
ভালই বাসিস নাহ।
তাই মেয়েটিকে না দেখেই
বললাম,
--আমি আপনাকে বিয়ে করলেও বউ
এর অধিকার দিতে পারবনা।
--তাইলে কাকে অধিকার দিবেন??
মেঘাকে??
.
মেয়েটির কন্ঠস্বরটি বেশ চেনা
চেনা লাগল।
ঘোমটা তুলেই মেয়েটি আমাকে
চোখ রাঙালো।
একি,
এত আমার মেঘাই।
সেই মেঘা যাকে ৫ বছর আগেই
রেখে চলে গেছিলাম বাইরে।
.
--তুমি??
--তো কাকে ভেবেছিলে??অন্য
মেয়েকে??
খেয়ে ফেলব অন্য মেয়েকে বিয়ে
করলে।
--মানুষ থেকে রাক্ষসী হইলা কবে??
--এখনো হয়নি কিন্তু হব বিয়ের পর।
--কে বিয়ে করছে??তোমাকে তো
আমি বিয়েই করব না।তুমি আমার
সাথে এমন করলে কেন??
--এমন না করলে আজ কি তোমাকে
পেতাম??
আমিই তোমার পরিবারকে এমন
করতে বলেছিলাম।
--বেশ করেছো।কিন্তু তোমাকে
আমি বিয়ে করব নাহ।
--কেন কেন??
--কেন আবার,তুমিতো রাক্ষসী
একটা।
--তোমার জন্য না হয় রাক্ষসী
থেকে আবার মানুষই হব।
.
আর কথা না বারিয়ে ওকে বুকে
জরিয়ে নিলাম।
এত বছরের জমানো ভালবাসা সব
দিয়ে দিব মেঘাকে।
মেয়েরা এমন কেন হয়??
সব কিছুই করতে পারে ভালবাসার
মানুষকে পাবার জন্যে।
সব দিক থেকে মনে হচ্ছে শেষ
হয়েও হয়নি শেষ।

No comments:

Post a Comment